Wednesday, October 28, 2020

জ্ঞান সম্পর্কিত কিছু উক্তি


 চিন্তাশক্তি হচ্ছে জ্ঞানের অন্বেষক ।


উৎকৃষ্ট সম্পদ হলো জ্ঞান ।


কিছু করার পূর্বে একাধিক ভাবা জ্ঞানী ব্যক্তির বিশেষণ।


জ্ঞানী ব্যক্তির শক্তি হচ্ছে কৌশলতা ।


সকল শিক্ষিত ব্যক্তি জ্ঞানী নয়, অনুরূপ সকল জ্ঞানী ব্যক্তিও শিক্ষিত নয় ।


জ্ঞান মানুষের হূদয়কে আলোকিত করে ।


জ্ঞান হচ্ছে মানুষের পথপ্রদর্শক ।


জ্ঞানী ব্যক্তির কোনো একাকিত্ব নেই ।








Tuesday, October 27, 2020

নবী মুহাম্মদ (সা) কে অবমাননায় বয়কট ফ্রান্সকে

 

ফ্রান্সে প্রকাশ্যে মহানবী (সা.) এর ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন করা হয়েছে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এর সমালোচনা করে তিব্র প্রতিবাদ জানালেও দেশটির সরকার কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করে এটাকে তাদের বাক স্বাধীনতা বলছে। এতে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে মুসলমানরা। সারাবিশ্বের মুসলমানদের পাশাপাশি ইসরায়েলসহ অন্যান্য দেশেও চলছে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড়। বিশ্বনবী (সা.)-এর অবমাননার প্রতিবাদে বিশ্বব্যাপী সোশ্যাল মিডিয়ায় ফ্রান্সের পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছে নেটিজেনরা। ফেইসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রামসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফ্রান্সে পণ্যের তালিকা দিয়ে সেগুলো বর্জনের ডাক দিচ্ছে তারা। হ্যাশ ট্যাগ দিয়ে তারা ‘বয়কট ফ্রেঞ্চ’, ‘বয়কট ফ্রেঞ্চ প্রডাক্টস’ ইত্যাদি ক্যাম্পেইন করছে।


সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. তুহিন মালিক তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে লিখেন, ‘‘শয়তানকে পাথর মারলে সেই পাথরের আঘাতে শয়তান মারা যায় না। এটা ক্ষুদ্র কঙ্কর। এই কঙ্কর নিক্ষেপ বিতাড়িত শয়তানের বিরুদ্ধে একটি প্রতীকি প্রতিবাদ। শয়তানের কূমন্ত্রনার বিরুদ্ধে। মানুষকে বিপথগামিতার বিরুদ্ধে। শয়তানের শয়তানীর বিরুদ্ধে। তাই শয়তানদের পণ্য বয়কট করাও একটি প্রতীকি প্রতিবাদ। আর তা যতই ক্ষুদ্র হোক। যতই কঙ্করসম হোক। ইসলাম বিদ্বেষী ফ্রান্সের পণ্য বয়কট আমাদের একটি মনস্তাত্ত্বিক প্রতিবাদ। রাসূল (সাঃ)-কে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ঘৃণ্যতম অবমাননার বিরুদ্ধে এই বয়কট আমাদের ঈমানি অবস্থান। আমাদের নিজেদের জীবনের চাইতেও প্রিয়তম রাসূল (সাঃ)এর অবমাননাকারী শয়তানদের বিরুদ্ধে এটাই আমাদের নিন্দার ভাষা। এটাই শয়তানের উদ্দেশ্যে আমাদের প্রতীকি কঙ্কর নিক্ষেপ। জাতীয় কবি কাজী নজরুলের ভাষায়-‘রাসূলের অপমানে যদি কাঁদে না তোর মন, মুসলিম নয় মুনাফিক তুই রাসূলের দুশমন।’’



মুহাম্মদ ফরহাদ খান তার ফেইসবুক প্রোফাইলে লিখেন, ‘ফ্রান্স তুমি ইসলামের ইতিহাস পড়নি! ঐ সত্তার কসম খেয়ে বলছি, আমার প্রিয় নবী (সাঃ)-কে অসম্মান করছো, আমরা মুসলমান রাষ্ট্রগুলো আজ নিরব থাকলেও আল্লহ তার হাবিবের অসম্মান বরদাস্ত করবেন না, ইনশাআল্লাহ। নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারলে ধ্বংস অনিবার্য।’


ফ্রান্সের পণ্য বয়কটের আহ্বান জানিয়ে এমডি এনামুল হক লিখেন, ‘বিশ্বনবী মোহাম্মদ (সঃ)-কে অবমাননা করার কারণে ফ্রান্সকে ধিক্কার জানাই এবং আমি তাদের সকল পণ্য বর্জন করলাম। আপনিও করুন।’


জান্নাতুল নাঈম মনি মনে করেন, ‘পুরো দুনিয়ার মুসলিমরা যদি এসব বদমাশ রাষ্ট্রগুলাকে বয়কট করা শুরু করে, এরা কেঁদে কূল পাবে না। হাতে ভিক্ষার থালা নিয়ে ভিক্ষা করবে। এরা নিজেদের সীমা ভুলে গেছে। তাই এদের জায়গাটা দেখিয়ে দেয়া দরকার।’



ইজাজ ভুইয়া লিখেন, ‘মুসলিম বিশ্ব ইউরোপ আমেরিকার পণ্য বর্জনের ঘোষণা দিলে ইউরোপ আমেরিকা না খেয়ে মরবে,কিন্তু আমরা মুসলিমরাই ঠিক নাই, এক হতে পারি না। একবার সমস্ত মুসলিম দেশগুলো বর্জন করে, ওদের শক্তি সামর্থ্য সম্পর্কে বুঝিয়ে দেওয়া উচিৎ যে, মুসলিমরা তোদের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে কি পরিমাণ ভূমিকা রাখে।’


‘ইনশাআল্লাহ, আমিও বয়কট করেছি ও মনে মনে পোষণ করেছি, জীবনে জেনে শুনে কখনও তাদের পণ্য ব্যবহার করবো না। আপনি করেছেন তো?’ - ওহাব সরকারের জিজ্ঞাসা।

বিজ্ঞান কি?


 ভৌত বিশ্বের যা কিছু পর্যবেক্ষণযোগ্য, পরীক্ষণযোগ্য ও যাচাইযোগ্য, তার সুশৃঙ্খল, নিয়মতান্ত্রিক গবেষণা ও সেই গবেষণালব্ধ জ্ঞানভাণ্ডারের নাম বিজ্ঞান।



মহাবিশ্বের আকৃতি অনুসারে বিজ্ঞান বিভিন্ন শাখার প্রমাণ্যচিত্র.

science


ল্যাটিন শব্দ সায়েনটিয়া (scientia) থেকে ইংরেজি সায়েন্স শব্দটি এসেছে, যার অর্থ হচ্ছে জ্ঞান। বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান শব্দটির অর্থ বিশেষ জ্ঞান। ধারাবাহিক পর্যবেক্ষণ ও গবেষণার ফলে কোন বিষয়ে প্রাপ্ত ব্যাপক ও বিশেষ জ্ঞানের সাথে জড়িত ব্যক্তি বিজ্ঞানী, বিজ্ঞানবিদ কিংবা বৈজ্ঞানিক নামে পরিচিত হয়ে থাকেন।


বিজ্ঞানীরা বিশেষ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে জ্ঞান অর্জন করেন এবং প্রকৃতি ও সমাজের নানা মৌলিক বিধি ও সাধারণ সত্য আবিষ্কারের চেষ্টা করেন। বর্তমান বিশ্ব এবং এর প্রগতি নিয়ন্ত্রিত হয় বিজ্ঞানের মাধ্যমে। তাই এর গুরুত্ব অপরিসীম। ব্যাপক অর্থে যেকোনো জ্ঞানের পদ্ধতিগত বিশ্লেষণকে বিজ্ঞান বলা হলেও এখানে বিশেষায়িত ক্ষেত্রে শব্দটি ব্যবহার করা হবে।


বিজ্ঞানের ক্ষেত্র মূলত দুটি: সামাজিক বিজ্ঞান এবং প্রাকৃতিক বিজ্ঞান। জীববিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়নসহ এ ধরনের সকল বিজ্ঞান প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত। অন্যদিকে মানুষের আচার-ব্যবহার এবং সমাজ নিয়ে যে বিজ্ঞান তা সমাজ বিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত। তবে যে ধরনেরই হোক, বিজ্ঞানের আওতায় পড়তে হলে উক্ত জ্ঞানটিকে সুনির্দিষ্ট পর্যবেক্ষণ এবং পরীক্ষণের মাধ্যমে প্রমাণিত হতে হবে। আর একই শর্তের অধীনে যে গবেষকই পরীক্ষণটি করুন না কেন ফলাফল একই হতে হবে। অর্থাৎ ব্যক্তি চেতনা অনুযায়ী বিজ্ঞানভিত্তিক পরীক্ষণের ফলাফল কখনও পরিবর্তিত হতে পারে না।


গণিতকে অনেকেই তৃতীয় একটি শ্রেণি হিসেবে দেখেন। অর্থাৎ তাদের মতে প্রাকৃতিক বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান আর গণিত এই তিনটি শ্রেণি মিলে বিজ্ঞান। ঐ দৃষ্টিকোণে গণিত হলো আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞান আর প্রাকৃতিক ও সামাজিক বিজ্ঞান হলো পরীক্ষণমূলক বিজ্ঞান। প্রাকৃতিক ও সামাজিক বিজ্ঞানের সাথে গণিতের মিল-অমিল উভয়ই রয়েছে। গণিত একদিক থেকে পরীক্ষণমূলক বিজ্ঞানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ যে, উভয়টিই একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে পদ্ধতিগত অধ্যয়ন করে। আর পার্থক্য হচ্ছে, পরীক্ষণমূলক বিজ্ঞানে পরীক্ষণের মাধ্যমে প্রমাণ করা হলেও গণিতে কোনো কিছু প্রতিপাদন করা হয় আগের একটি সূত্রের (প্রায়োরি) উপর নির্ভর করে। এই আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞান, যার মধ্যে পরিসংখ্যান এবং যুক্তিবিদ্যাও পড়ে, অনেক সময়ই পরীক্ষণমূলক বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। তাই পরীক্ষণমূলক বিজ্ঞানে উন্নতি করতে হলে আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞানের প্রসার আবশ্যক। কিভাবে কোনো কিছু কাজ করে (প্রাকৃতিক বিজ্ঞান) বা কীভাবে মানুষ চিন্তা করে (সামাজিক বিজ্ঞান) তাই আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞান ব্যাখ্যা করে।

চিন্তাধারা


 চিন্তাধারার ফলে আসা ধারণা বা ধারণাবিন্যাসকে চিন্তা বোঝায়। যদিও চিন্তা করা মানবতার একটি অপরিহার্য কার্যকলাপ,একে সংজ্ঞায়িত বা এটা বোঝার কোনো সাধারণ ঐক্যমত্য নেই।.



জোস্ ফেরাজ্ দে আলমেদা জুনিয়র (José Ferraz de Almeida Júnior)-এর বইসহ মেয়ে (Girl with a Book) যেহেতু চিন্তার মানুষের অনেক কর্ম এবং মিথস্ক্রিয়ার কারণ, ঠিক নিচেই বুঝতে এর শারীরিক এবং আধিবিদ্যক উদ্ভব, প্রক্রিয়াসমূহ, এবং প্রভাব বোঝার চেষ্টা ভাষাবিদ্যা, মনোবিজ্ঞান, স্নায়ুবিজ্ঞান, দর্শন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, জীববিদ্যা, সমাজবিজ্ঞান এবং বোধ বিজ্ঞান সহ অনেক পান্ডিত্যশাখার দীর্ঘদিনের লক্ষ্য হয়ে আছে।


চিন্তা করার ফলে মানুষ অনুভূত দুনিয়া জানা, ব্যাখ্যা, চিত্রিত করা, নকশা বানানোতে এবং সেই সম্পর্কে ভবিষ্যৎবাণী করতে সাহায্য করে। সুতরাং চাহিদা, উদ্দেশ্য এবং ইচ্ছা একটি প্রাণীর সহায়ক কারণ এতে সে পরিকল্পনা করে বা এই লক্ষ্যে সাধন করার প্রচেষ্টা করে।


বু্ৎপত্তি এবং ব্যবহার:-

ইউজিন দে ব্লাস্ (Eugene de Blaas) -এর একটি ধ্যানমগ্ন মুহূর্ত (A Pensive Moment) (১৯০৪)

চিন্তা শব্দটি প্রাচীন ইংরেজি পহ্ট (þoht) বা গেপহ্ট (geþoht) থেকে আসে, পেনকান (þencan) কান্ড থেকে "মনে কল্পনা করা, বিবেচনা" ("to conceive of in the mind, consider")।


"চিন্তা" পদের অর্থ হতে পারে

একটি একক ভাবনার পণ্য বা একটি একক ভাবনা ।


মানসিক কার্যকলাপের ফল চিন্তাভাবনার প্রক্রিয়া ।

চিন্তা করা, যুক্তি করা, কল্পনা করা ইত্যাদির ক্ষমতা ("তার সকল চিন্তা তার কাজে প্রতিফলিত হয়েছে।")

একটি ধারণা উপর বিবেচনা বা ধারণার প্রতিফলন ("মৃত্যুর চিন্তা আমাকে ভয় দেখায়।")

মনে করা ("আমি আমার শৈশব নিয়ে চিন্তা করছিলাম।") অর্ধ গঠিত বা অপূর্ণ উদ্দেশ্য ("আমি যাওয়ার ব্যাপারে চিন্তা করছিলাম।")

অগ্রজ্ঞান বা প্রত্যাশা ("সে তার সাথে আর কখনোই না দেখা করা ঠিক করেছিল। ")

বিবেচনা, মনোযোগ, যত্ন, বা বিবেচনা ("তিনি তার চেহারা ব্যাপারে কোন চিন্তাই করেননি।" এবং "আমি চিন্তার সময় পাই নি।")

রায়, মতামত, বা বিশ্বাস ("তার চিন্তা অনুযায়ী, সততাই সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা।")

একটি নির্দিষ্ট জায়গা, বর্গ, বা সময় এর চরিত্রগত ধারণা ("গ্রিক চিন্তাভাবনা")

কোনো কিছু ব্যাপারে সচেতন হওয়ার অবস্থা ("এটা আমাকে আমার নানী-এর চিন্তা করায়।")

কিছু বিশ্বাস করতে শুরু করা, বিশেষত কিছু কম আস্থার সঙ্গে ("আমি চিন্তা (মনে) করি যে বৃষ্টি হবে, কিন্তু আমি নিশ্চিত নই।")


চিন্তনরত হুইকে (Huike Thinking), দশম শতাব্দীর চিত্রশিল্পী শি কে (Shi Ke)-এর অঙ্কিত চ্যান (Chán) কুলপতি দাজু হুইকে (Dazu Huike)-এর একটি প্রতিকৃতি এরূপ সংজ্ঞাতে সেসব চিন্তার প্রয়োজন হতে পারে বা নাও হতে পারে যেগুলি


একজন মানুষের মস্তিষ্কের মধ্যে সঞ্চালিত হয়,

একটি জীবন্ত জৈবিক ব্যবস্থার অংশ হিসাবে সঞ্চালিত হয় (অ্যালান টুরিং দ্রষ্টব্য),

শুধুমাত্র সচেতনতার একটি সচেতন স্তরে সঞ্চালিত হয়,

ভাষা প্রয়োজন হয়,

প্রধানত, বা এমনকি শুধুমাত্র ধারণাগত, বিমূর্ত হয় ("আনুষ্ঠানিক"),

অন্যান্য ধারণা যেমন তুলনা অঙ্কন, ব্যাখ্যা করা, মূল্যায়ন করা, কল্পনা করা, পরিকল্পনা করা, এবং মনে রাখার সঙ্গে জড়িত।

এছাড়াও চিন্তার সংজ্ঞা সরাসরি বা পরোক্ষভাবে চিন্তার তত্ত্ব থেকে উৎপন্ন করা যায়।


"চিন্তাপদ্ধতির এবং চিন্তাযন্ত্রের একটা তত্ত্বের রূপরেখা" (কাইয়ানিয়েলো) - চিন্তাপদ্ধতি ও মানসিক ক্ষমতার উদ্ভব গাণিতিক সমীকরণ সেটের আদলে

পৃষ্ঠতল এবং সারমর্ম: চিন্তাভাবনার জ্বালানি ও অগ্নির মত সাদৃশ্য (হফস্ট্যাডার এবং স্যান্ডার) - একটি উপমাভিত্তিক তত্ত্ব

ভাষা ও চিন্তাধারার স্নায়বিক তত্ত্ব (ফেল্ডম্যান এবং ল্যাকঅফ) - ভাষা এবং স্থানিক সম্পর্কের স্নায়বিক নকশা

চিন্তার ধরন - চিন্তাধারার গড়ন, ক্ষমতা এবং সীমাবদ্ধতা (বায়ুম) - একটি মানসিক নকশাভিত্তিক তত্ত্ব ।

Monday, October 26, 2020

আল-কুরআনের প্রথম বাংলা অনুবাদক

গিরিশ চন্দ্র সেন । তার জন্ম: ১৮৩৪ - মৃত্যু: ১৫ আগস্ট ১৯১০ । তিনি ছিলেন একজন বাঙালি ধর্মবেত্তা,অনুবাদক ও বহুভাষীক। ভাই গিরিশচন্দ্র সেন নামেই তিনি বেশী পরিচিতি পেয়েছেন। বাংলা ভাষাভাষী জনসাধারনের নিকট প্রথম বাংলা ভাষায় পুর্নাঙ্গ কুরআন অনুবাদ ও প্রকাশের কৃতিত্ব তাকে দেয়া হয়। তিনি আরবি, ফার্সি, উর্দু এবং ইসলামী বিষয়াবলী সমন্ধেও পান্ডীত্য অর্জন করেছিলেন।

গিরিশ চন্দ্র সেনের জন্ম নরসিংদী জেলার পাঁচদোনা গ্রামে। কর্মগত জীবনের শুরুর পর্যায়ে তিনি ময়মনসিংহের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের কাচারিতে নকলনবিশ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পরে স্বল্প সময়ের জন্য ময়মনসিংহ জেলা স্কুলে শিক্ষকতা করে সাংবাদিকতা ও সাহিত্যচর্চায় আত্মনিয়োগ করেন। প্রথম পর্যায়ে তিনি ঢাকা প্রকাশে কাজ করেন এবং এতে তাঁর লেখা প্রকাশিত হয়। পরে তিনি সুলভ সমাচার ও বঙ্গবন্ধু পত্রিকার সহযোগী সম্পাদক এবং মাসিক মহিলা (১৩০২) পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

ছাত্রজীবনে তিনি ফারসি ও সংস্কৃত ভাষা শিক্ষা করেন। কেশবচন্দ্র সেন ও বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামীর প্রভাবে ১৮৭১ সালে তিনি ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষিত হন এবং প্রচারব্রত গ্রহণ করে উত্তর ভারত, দক্ষিণ ভারত ও ব্রহ্মদেশ ভ্রমণ করেন। গুরু কেশবচন্দ্র সেনের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণায় তিনি ইসলামি সাহিত্য-সাধনায় আত্মনিয়োগ করেন। এ উপলক্ষে আরবি ভাষা ও ইসলামিক ধর্মশাস্ত্র চর্চার জন্য তিনি ১৮৭৬ সালে লক্ষ্ণৌ গমন করেন। সেখান থেকে প্রত্যাবর্তন করে কুরআনের বঙ্গানুবাদ (১৮৮১-৮৬) সম্পন্ন করেন। বাংলা সাহিত্যে এটা তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি। ধর্ম সম্পর্কে জানার আগ্রহ, চারিত্রিক উদারতা এবং সত্যবাদিতার জন্য গিরিশচন্দ্র ব্রাহ্ম-হিন্দু-মুসলমান-খ্রিস্টান সকলের শ্রদ্ধা অর্জন করেন। এক কথায় তিনি ছিলেন সর্বধর্মসমন্বয়ের প্রতীক। তাই সকলের নিকট তিনি ‘ভাই গিরিশচন্দ্র’ নামে পরিচিত ছিলেন।

ব্রাক্ষধর্ম প্রচারের লক্ষ্যে কেশবচন্দ্রের অনুরোধ ও ব্যবস্থাপনাতে তিনি ফার্সি ভাষায় আরো গভীর জ্ঞান লাভ এবং আরবি-ফার্সি সাহিত্যের ওপর পড়াশোনা করার জন্য কানপুর ও লখনউ গমন করেন। ফিরে আসার পর কেশবচন্দ্রের উৎসাহেই তিনি ইসলামি দর্শনের উপর গবেষণা শুরু করেন। কিন্তু ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে পড়াশোনা ও গবেষণা করার জন্য প্রধান বাধাই ছিল ভাষা। ব্রাহ্মসমাজের প্রচারের উদ্দেশ্যে কেশবচন্দ্র সেন পরিচালিত নববিধান সভা ইসলাম ধর্মগ্রন্থসমূহ বাংলায় অনুবাদ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। তবে গিরিশচন্দ্র সেন সরাসরি আরবী থেকে পবিত্র কুরআন শরীফ বাংলা অনুবাদ করেননি। বরং আরবীর পাশাপাশি ফার্সী অনুবাদেরও সাহায্য নিয়ে ছিলেন। আর তিনি আল্লাহ পাক এর নামের জায়গায় স্রষ্টা/ঈশ্বর এবং নবী ও রাসুল এর স্থানে পয়গম্বর/অবতার/দেবদূত ফেরেশতাদের স্থলে দেব-দেবী ইত্যাদি ব্যবহার করে ছিলেন।

কোরানশরিফ অনুবাদ করতে আরবী ব্যাকরণের সঠিক ব্যাবহার এবং কোরান শরিফের বিশেষ জ্ঞান থাকা আবশ্যিক ছিল তাই তৎকালীন দুটি মুসলিম সম্প্রদায় এটির প্রশংসা করলেও গিরিশ চন্দ্র সেনের পূর্ণাঙ্গ অনুবাদকর্ম যেটা তখন বাজারে প্রচলিত ছিলো তাও ছিলো নানা দোষে দুষ্ট, তাই সকলের নিকট তা অনুবাদ গ্রহণযোগ্য হয়নি ।

 

আল-কুরআনের পরিচিতি


 কুরআন মাজীদ হলো ইসলাম ধর্মের পবিত্র কিতাব। এটিকে মুসলমানরা আল্লাহর বানী বলে বিশ্বাস করে ।

কুরআন মাজীদ আরবী ভাষায় রচিত । এটিকে আরবি শাস্ত্রীয় সাহিত্যের সর্বোপেক্ষা উৎকৃষ্ট রচনা বলে মনে করা হয়।

কুরআন মাজীদ সূরা বা অধ্যায় ভাগে বিভক্তকৃত, এবং সূরা গুলোকে বিভক্ত করা হয়েছে আয়াত বিত্তিক ।

মুসলমানদের বিশ্বাস আল্লাহ তার ফেরেশতা জিবরাইল (আ) এর মাধ্যমে নবি মুহাম্মদ (সা) এর নিকঠ মৌখিকভাবে কুরআনের আয়াতগুলো অবতীর্ণ করেছেন ।

সমগ্র কুরআন একসাথে অবতীর্ণ হয়নি, বরং তা ধাপে ধাপে দীর্ঘ তেইশ বছরে সম্পূর্ণ কুরআন অবতীর্ণ হয়। কুরআনের প্রথম আয়াত অবতীর্ণ হয় ৬০৯ খ্রিষ্টাব্দের ২২ ডিসেম্বর যখন মুহাম্মদের বয়স ছিলো ৪০ বছর, এবং অবতরণের সমাপ্তি ঘটে ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে।

মুসলমানদের বিশ্বাস কুরআন হলো মুহাম্মদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অলৌকিক ঘটনা যা তার নবুয়তের সনদ বাহক এবং ঐশ্বরিক বার্তা প্রেরণের ক্রমশ প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত পর্যায়, যার সূচনা হয় নবী আদম (আ) থেকে এবং সমাপ্তি ঘটে নবী মুহাম্মদ (সা) এর মাধ্যমে ।

তবে সুফিবাদের অনুসারীদের বিশ্বাস হলো মুহাম্মদের সকল কার্যকলাপ উম্মতের কাছে বোধগম্য করে তোলার জন্যই কুরআন অবতীর্ণ করা হয়েছে।

ইসলামি ইতিহাস অনুপাতে দীর্ঘ তেইশ বছর ধরে খণ্ড খণ্ড ভাগে কুরআন মাজীদ ইসলামের নবি মুহাম্মদ (সা) এ নিকট অবতীর্ণ হয়। ইসলামের অনুসারীরা কুরআনকে একটি পুর্ণাঙ্গ জীবন আইন বলে বিশ্বাস করেন। 

কুরআনে সর্বমোট ১১৪টি সূরা বা অধ্যায় বিদ্যমান। আয়াত বা পঙ্‌ক্তি সংখ্যা ৬,৬৬৬ টি; মতান্তরে ৬,২৩৬ টি।

মুসলিমদের চিন্তাধারা অনুসারে কুরআন ধারাবাহিকভাবে অবতীর্ণ ধর্মীয় গ্রন্থগুলোর মধ্যে সর্বশেষ ।

ইসলামি ভাষ্যমতে কুরআন এক অপরিবর্তনশীল কিতাব এবং এ সম্পর্কে মুসলিমরা কুরআনের সূরা আল-হিজরের ১৫ নং সূরা, ৯ নং আয়াতের কথা উল্লেখ করে থাকে, এবং তা হল:

আমি স্বয়ং এ উপদেশগ্রন্থ অবতরণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক ।

Sunday, October 25, 2020

মানব জীবন এক ভয়াবহ যোদ্ধক্ষেত্র

 

মানব জীবন একটি যুদ্ধক্ষেত্র, অদিকাল থেকেই মানুষ যুদ্ধ-লড়াই করার মাধ্যমে স্বীয় জীবন ধারণ করে আসছে । একজন মানুষের জীবনে নানাবিধ সমস্যা থাকে, কারো মানষিক সমস্যা, কারো আর্থিক সমস্যা, কারো পারিবারিক সমস্যা, কারো ব্যক্তিগত সমস্যা ইত্যাদি আরও.....। এসব সমস্যার সমাধান করতে মানুষ প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে চলে নিজ চিত্তের সাথে । তবুও সমস্যা থেকেই যায়, কারণ সমস্যা জিনিসটা অন্তহীন । মানুষ নিজের সমস্যার সমাধান করতে এবং সমাধান খুঁজতে খুজতে  এক সময় সে ইহলোকে পাড়ি জমায় । একজন ব্যক্তি তার নিজের কথা ভাবে, পরিবারের কথা ভাবে, সে ভাবে কিভাবে সে নিজে ভালো থাকতে পারবে এবং নিজের পরিবারকে ভালো রাখতে পারবে? আসলে ভাবনাটাই হলো জীবন, যে ভাবতে জানেনা তার জীবন অর্থহীন । মানুষ জিবিকার জন্য প্রতিনিয়ত নিজ ধান্দায় (কর্মে) ব্যাস্ত থাকে, কারণ বেচে থাকার জন্য জীবিকা বা খাদ্য হলো মানুষের জন্য আবশ্যিক কিছু । মানুষ খাদ্যের জন্য চুরিও করছে, একজন পুরুষ নিজ পরিবার পরিজনের (মা বাবা বউ বাচ্ছা...) জন্য বিলিয়ে দিচ্ছে নিজেকে । মানব জীবন কোনো সাধারণ যুদ্ধ নয়, এটা এক ভয়াবহ যুদ্ধ । মানুষের এই লড়াইয়ের পরিসমাপ্তি কেবল মৃত্যুর মাধ্যমেই হয় । এতো সমস্যা ও ডিপ্রেশনের মধ্য দিয়ে মানুষ খুঁজে বেরায় কিছুটা প্রশান্তি বা সুখ । পৃথিবীতে এমন কোনো মানুষ নেই, যে এই পৃথিবীতে সুখি হতে চাইনা! । সবাই সুখি হতে চাই, অথচ মানুষ এটা উপলব্ধ করতে চাইনা যে, পৃথিবী কোনো সুখি হওয়ার স্হান নয়, এখানে আপনি-আমি এবং আমরা সবাই একজন লড়াকু, কখনো আমরা নিজের সাথে লড়ি, কখনো প্রকৃতির সাথে লড়ি, কখনো লড়ি নিয়তির সাথে । এভাবে লড়তে লড়তে আমারা এক সময় মৃত্যুর কাছে হেরে গিয়ে পরকালের সাথে অলিঙ্গন করি, কারণ মানুষ যতোই শক্তিশালী হোক না কেন, মৃত্যুর কাছে সে পরাজিত । জীবন নামক ভয়াবহ যোদ্ধক্ষেত্রে হার না মানা মানুষ একদিন মৃত্যুর কাছে নিজেকে অর্পিত করার মাধ্যে জীবন যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটায় ।

প্রীতি উক্তি

উন্মুক্ত প্রেম অপেক্ষা গুপ্ত প্রেম অধিক রসাত্মক ।


কল্পনার প্রেম মধুময় ।


যৌনতা প্রেমের উৎসের একাংশ ।


যে কাউকে ভালোবাসা যায়, কিন্তু যে কারো প্রেমে পড়া যায়না ।


প্রেম ছাড়া ভালোবাসা হয়, কিন্তু ভালোবাসা ছাড়া প্রেম হয়না ।


প্রেম কখনো প্রতারণা করেনা, কিছু না কিছু দিয়ে যায় (সংকলিত) ।


ভুল পাত্রে ভালোবাসা দান করা চরম ভুল, যার অনুশোচনা অন্তহীন ।


জেনে বুঝে প্রেমে পড়া উচিত ।


মায়া হচ্ছে চম্বুকের মতো, যা একে অপরকে আকর্ষিত করে ।


প্রতারণার একটি সীমান্ত থাকে, কিন্তু ভালোবাসা সীমান্তহীন ।


প্রেমনলে যার হূদয় অঙ্গার, নিন্দা তাকে আর কি পোড়াবে! (সংকলিত) ।


মানুষ একটা কিছুর বিনিময়ে ভিন্ন একটা কিছু নেন, শুধু মাত্র ভালোবাসার বেলায় মানুষ ভালোবাসার বিনিময়ে ভালোবাসা নিতে চাই ।


কোনো প্রেম-ই নিঃস্বার্থ নয় ।


কুড়ি বছরের কম বয়সি মেয়েদের প্রেমে পড়া উচিত নয় ।


প্রেম বিষাদময়, তবুও মানুষ প্রেমের দিশারী ।


_____ উক্তিগুরুঃ লোকমান 








 

মূর্খতা নিয়ে উক্তি

 

মূর্খ ব্যক্তির শক্তি হলো তার দেহবল, অন্যদিকে জ্ঞানী ব্যক্তির শক্তি হচ্ছে কৌশলতা ।


অধিকাংশ মূর্খ ব্যক্তি অনুমানকে নিশ্চয়তা দিয়ে দেয় ।


মূর্খ ব্যক্তিরা নিরর্থক কথা বলে শান্তি পায় ।


মূর্খের সাথে বিতর্ক করা মূর্খতার বহিঃপ্রকাশ ।


মূর্খ ব্যক্তির সব থেকে খারাপ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তার মূর্খতা।


মূর্খ ব্যক্তির মূর্খতা অশান্তি ও অনিষ্ট বয়ে আনে ।


মূর্খের সাথে বিতর্ক করা কোনো জ্ঞানী ব্যক্তির শোভা পায়না ।


মূর্খ ব্যক্তির পার্শ্ব এড়িয়ে চলা ভালো ।


মূর্খদের তিরিস্কার করা উচিত নয়, বরং তাদের উপদেশ দেওয়া উচিত নম্রতার সাথে ।


মূর্খদের উপদেশ দেন তার সঙ্গী না হয়ে ।


মূর্খের সাথে বিতর্ক করা অশোভনীয় তবে তার প্রশ্নের উত্তর দেওয়া উচিত ।


কোনো মূর্খ ব্যক্তি যদি বিতর্ক করতে চাই, তবে জ্ঞানী ব্যক্তির উচিত সেই স্হান পরিত্যাগ করা ।


বিতর্কে পৃথিবীর সকল জ্ঞানীরাই একজন মূর্খ ব্যক্তির কাছে হেরে যাবে ।


মূর্খ ব্যক্তির দৃষ্টান্ত চতুষ্পদ জন্তু ।


মূর্খ দুই প্রকার হয়; নিরক্ষর মূর্খ এবং শিক্ষিত মূর্খ ।


____এল. কে. লোকমান

জ্ঞান সম্পর্কিত কিছু উক্তি

 চিন্তাশক্তি হচ্ছে জ্ঞানের অন্বেষক । উৎকৃষ্ট সম্পদ হলো জ্ঞান । কিছু করার পূর্বে একাধিক ভাবা জ্ঞানী ব্যক্তির বিশেষণ। জ্ঞানী ব্যক্তির শক্তি হচ...